ভূমিকা :
সমস্ত প্রশংসা সারা বিশ্বের প্রতিপালক মহান আল্লাহ তাআলার। সালাত ও সালাম বিশ্ব শান্তির বার্তা বাহক হযরত মুহাম্মদ সা. এর উপর। আল্লাহ আমাদের রব, তিনি আমাদের সৃষ্টি করেছেন। আমরা তাঁর বান্দা। বান্দা হিসেবে তাঁর সন্তুষ্টি অর্জন এবং তাঁর অনুগত হয়ে চলার মধ্যেই আমাদের সার্বিক কামিয়াবী। এরই পথ নির্দেশনার জন্য হযরত আদম আ. থেকে শুরু করে হযরত মুহাম্মদ সা. পর্যন্ত যুগে যুগে আবির্ভূত হন অসংখ্য নবী ও রাসূল। এ ধারারই সর্বশেষ এবং সর্ব শ্রেষ্ঠ রাসূল হযরত মুহাম্মদ সা.। তিনি এলেন ইলমে ওয়াহীর পয়গাম নিয়ে। ঘোষণা করলেন ইসলামই একমাত্র আল্লাহ তাআলার মনোনীত দ্বীন। শিক্ষা দিলেন একমাত্র এ পথেই কল্যাণ ও কামিয়াবী। ইলমে ওয়াহীর সেই শিক্ষা মানব জাতিকে কল্যাণ ও আলোর পথের সন্ধান দিল। গড়ে উঠল ইলমী ও আমলী ভাবে সাহাবায়ে কেরামের এক আদর্শ কাফেলা। পরবর্তীতে তাবেঈন, তাবে-তাবেঈন, আয়িম্মায়ে মুজতাহিদীন, উলামা ও সুলাহায়ে উম্মত এ ধারাকে সমুন্নত রাখেন। তাদের ত্যাগ ও কুরবানীর বিনিময়েই ওয়াহীয়ে ইলাহীর সে ধারা যুগ যুগ ধরে চলে আসছে এবং তা কিয়ামত পর্যন্ত চলতে থাকবে ইনশাআল্লাহ।
হক ও বাতিলের লীলাক্ষেত্র এ পৃথিবী। আবহমান কাল থেকেই হক ও বাতিলের এ সংঘাত চলে এসেছে এখানে। পরিণামে আল্লাহ তাআলা সর্বদাই হককে জয়ী করেছেন। কালক্রমে পাক-ভারত উপ-মহাদেশ হতে ইলমে ওয়াহী বা ইসলামী শিক্ষাকে সমূলে ধ্বংস করে দেয়ার জন্য বাতিল রূপে আত্মপ্রকাশ করে ইংরেজ বেনিয়ারা। এ বাতিলের প্রতিরোধে ১৮৬৬ ঈসায়ী সালের ৩০ মে হযরত কাসিম নানুতুবী রহ. এর সুদূর প্রসারী চিন্তা ও যোগ্য নেতৃত্বে ভারতের উত্তর প্রদেশের সাহারানপুর জেলার দেওবন্দ নামক স্থানে প্রতিষ্ঠিত হয় হকের পতাকাবাহী উপমহাদেশের দ্বীনি শিক্ষার দিক নির্দেশক প্রতিষ্ঠান মাদরে ইলমী ইসলামী শিক্ষার প্রাণকেন্দ্র বিশ্ব বিখ্যাত ঐতিহাসিক দারুল উলূম দেওবন্দ। এরই মাধ্যমে আল্লাহ তাআলা বাতিলের ঘৃণ্য চক্রান্তকে নস্যাত করে হকের পতাকা সমুন্নত করেন। উপ-মহাদেশের সর্বত্র ছড়িয়ে পড়ে ইসলামী শিক্ষার আলো। মুসলিম উম্মাহর মাঝে সঞ্চার হয় ঈমানের নব চেতনা। দারুল উলূম দেওবন্দ-এর মত ও পথ ধরে ইসলামী শিক্ষার বিস্তার ও দ্বীনের আদর্শকে বাস্তবায়িত করার মহান লক্ষ্যে ১৯৭৬ ঈসায়ী মোতাবেক ১৩৯৬ হিজরী, ১৩৮২ বাংলা সনে বাংলাদেশের ঐতিহ্যবাহী ময়মনসিংহ জেলার ময়মনসিংহ সিটি কর্পোরেশন এর ১৫নং ওয়ার্ড বিখ্যাত মাসকান্দা নামক স্থানের প্রাণ কেন্দ্রে প্রতিষ্ঠিত হয় মিফতাহুল উলূম মাদরাসা। যা বর্তমানে জামিয়া আরাবিয়া মিফতাহুল উলূম, মাসকান্দা, মোমেনশাহী,বাংলাদেশ নামে পরিচিত। আল্লাহ তাআলার অশেষ মেহেরবাণীতে প্রতিষ্ঠানটি দীর্ঘকাল যাবত সুষ্ঠুভাবে খালেছ দ্বীনি খেদমত আঞ্জাম দিয়ে আসছে। আল্লাহ তাআলা এ প্রতিষ্ঠান ও তার খেদমতকে কবুল করুন।
১৩৪৭ বাংলা মোতাবেক ১৯৩৯ ঈসায়ী, ১৩৬০ হিজরী সনে মাসকান্দা নিবাসী বিশিষ্ট ব্যক্তিত্ব , দ্বীন দরদী মরহুম ইলিম মন্ডল মসজিদ নির্মাণের জন্য ১৩ শতাংশ জায়গা ওয়াকফ করেন। এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গের সহযোগিতায় সে ওয়াকফ ভূমিতে মসজিদুল আমান নামে একটি মসজিদ প্রতিষ্ঠিত হয় এবং উক্ত মসজিদে একটি প্রভাতী মক্তব চালু করা হয়। পরবর্তীতে ময়মনসিংহ শহরের কালীবাড়ী বাইলেন নিবাসী বিশিষ্ট ব্যবসায়ী দ্বীন দরদী মরহুম আলহাজ আমীর হোসেন তার মরহুমা মাতা বিবন নেসার নামে মসজিদ লাগোয়া সাড়ে ছয় শতাংশ জায়গা ১৯৭৬ ঈসায়ী মোতাবেক ১৩৯৬ হিজরী, ১৩৮২ বাংলা সনে স্বতন্ত্রভাবে মাদরাসা প্রতিষ্ঠার জন্য ওয়াকফ করেন। উক্ত জায়গায় রাসুল সা. এর যোগ্য উত্তরসূরী এবং দেশ ও জাতীর সঠিক নেতৃত্ব প্রদানের উপযোগী আদর্শ নাগরিক সৃষ্টির লক্ষে জাতীয় পর্যায়ের একটি বৃহত্তর প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলার উদ্দেশ্যে হযরত মাওলানা আব্দুস সাত্তার রহ., আলহাজ হযরত মাওলানা কাজী আব্দুর রশিদ, হযরত মাওলানা আব্দুল হাই আজাদ রহ., জনাব আলহাজ আব্দুল আজিজ, জনাব মোঃ আব্দুল লতিফ, মরহুম আশরাফ আলী, মরহুম ইউনুস আলী, মরহুম আলহাজ আব্দুল জলিল সিকদার, মরহুম আলহাজ আজিজুর রহমান, জনাব আলহাজ আব্দুল জলিল ও হযরত মাওলানা আবু ইউসুফ প্রমূখ উলামায়ে কেরাম, গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ ও এলাকাবাসীর প্রচেষ্টায় প্রতিষ্ঠিত হয় মিফতাহুল উলূম মাদরাসা। মাদরাসাটি নানা প্রতিক‚লতা মোকাবিলা করে প্রভাতী মক্তব এবং মাদরাসা শিক্ষার প্রাথমিক দু’একটি ক্লাশ নিয়ে চলতে থাকে ১৯৯৩ ঈসায়ী সাল পর্যন্ত। ১৯৯৪ ঈসায়ী সালের এক শুভলগ্নে হযরত মাওলানা যাকারিয়া, হযরত মাওলানা মুফতী আহমদ আলী, হযরত মাওলানা দেলাওয়ার হোসাইন ও হযরত মাওলানা ইসহাক রহ. এক যুগে এসে এ প্রতিষ্ঠানে যোগদান করলে মাদরাসার কার্যক্রমে প্রাণচাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়।
তখন থেকেই হযরত মাওলানা মুফীজউদ্দীনসহ উলামায়ে কেরামের তত্ত্বাবধানে পরিচালিত এ প্রতিষ্ঠানটি দ্বীনি শিক্ষানুরাগী, এলাকাবাসী ও সুধীজনের দৃষ্টি আকর্ষণে সক্ষম হয় এবং এর উন্নতি ও অগ্রগতির নব দিগন্ত উন্মোচিত হয়। পরামর্শের ভিত্তিতে হযরত মাওলানা যাকারিয়াকে মুহতামিম নিযুক্ত করা হয় এবং নিয়মতান্ত্রিকভাবে নূরানী, নাযিরা ও হিফয বিভাগসহ হিদায়াতুননাহব জামাআত পর্যন্ত কিতাব বিভাগ খোলা হয়। পরবর্তীতে পর্যায়ক্রমে জালালাইন জামাআত পর্যন্ত খোলা হয়।
বিগত ২২মে ২০০৪ ঈসায়ীতে মাসকান্দা এলাকাবাসী, পরিচালনা কমিটি ও উলামায়ে কিরামের পরামর্শে হযরত মাওলানা দেলাওয়ার হোসাইন মুহতামিমের দায়িত্বভার গ্রহণ করেন। তার কর্মতৎপরতায় নতুন উদ্যমে শুরু হয় শিক্ষা ও উন্নয়নসহ সর্বক্ষেত্রে সফলতার নতুন অভিযাত্রা। আলহামদুলিল্লাহ! ১৯৭৬ ঈসায়ীতে মক্তব আকারে শুরু হওয়া প্রতিষ্ঠানটি বিগত ১৪২৮-১৪২৯ হিজরী মোতাবেক ২০০৬-২০০৭ ঈসায়ী শিক্ষাবর্ষে মাদরাসা শিক্ষার সর্বোচ্চ ক্লাশ তাকমীল/দাওরায়ে হাদীস/মাস্টার্স খোলার মাধ্যমে জামিয়ায় উন্নীত হয়।
বিগত ২২ মে ২০০৪ ঈসায়ীতে মাওলানা দেলাওয়ার হোসাইন মিফতাহুল উলূম এর দায়িত্ব ভার গ্রহণের পর তাঁর কর্ম তৎপরতায় শিক্ষা ও উন্নয়নসহ সর্ব ক্ষেত্রে সফলতার নতুন অভিযাত্রা শুরু হয় । যার ফলশ্রুতিতে ১৪২৮-১৪২৯ হিজরী মোতাবেক ২০০৬ -২০০৭ ঈসায়ী শিক্ষাবর্ষে কওমী মাদরাসা শিক্ষার সর্বোচ্চ ক্লাশ তাকমীল/দাওরায়ে হাদীস/মাস্টার্স খোলা হয় । তখন দেশের এবং মুসলিম বিশের অন্যান্য ইসলামী বিশ বিদ্যালয়গুলোর সমপর্যায়ের শিক্ষার মান উন্নয়ন ও তার প্রচার-প্রসারের সুদূর প্রসারী লক্ষ্য নিয়ে মাদরাসা কমিটি ও উলামায়ে কেরাম সর্বসম্মতিক্রমে বিগত ১৭-০৯-২০০৬ ঈসায়ী সনের রেজুলেশন মোতাবেক অত্র প্রতিষ্ঠানের নাম জামিয়া আরাবিয়া মিফতাহুল উলূম ( আরবী বিশ্ববিদ্যালয়-দ্বীনি ইলমের চাবি ) নামে পুন: নামকরণ করেন । বর্তমানে প্রতিষ্ঠানটির নাম জামিয়া আরাবিয়া মিফতাহুল উলূম, মাসকান্দা, মোমেনশাহী, বাংলাদেশ ।
এক নজরে জামিয়া :
জামিয়ার নাম : জামিয়া আরাবিয়া মিফতাহুল উলূম
সাবেক নাম : মিফতাহুল উলূম মাদরাসা
সাং : মাসকান্দা-১৫ নং ওয়ার্ড, ময়মনসিংহ সিটি কর্পোরেশন
ডাকঘর : ময়মনসিংহ
পোস্ট কোড : ২২০০
উপজেলা : ময়মনসিংহ সদর
জেলা : ময়মনসিংহ
দেশ : বাংলাদেশ
মোবাইল নম্বর : ০১৭১৬-৮২৭৭৪৩
ই-মেইল : jamiamaskanda@gmail.com
ওয়েবসাইট : jamiamaskanda.com
স্থাপিত : ১৯৭৬ ঈসায়ী, ১৩৯৬ হিজরী, ১৩৮২ বাংলা
অবস্থান : ময়মনসিংহ পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট মোড় হতে ১ কিলোমিটার পশ্চিম-দক্ষিণে ময়মনসিংহ
সিটি কর্পোরেশন এর ১৫ নং ওয়ার্ড বিখ্যাত মাসকান্দা নামক স্থানে অবস্থিত।
শিক্ষক সংখ্যা : ৩৪ জন।
কর্মচারী সংখ্যা : ১৪ জন।
ছাত্র সংখ্যা : ৭০৬ জন।
গরীব ও এতিম ছাত্রের ফ্রি খানার সংখ্যা : ২৫০ জন
সভাপতি : আল্লামা আব্দুর রাহমান হাফেজ্জী
মুহতামিম : হযরত মাওলানা দেলাওয়ার হোসাইন
শায়খুল হাদীস : হযরত মাওলানা মুফতী আহমদ আলী
নাযিমে তালীমাত: হযরত মাওলানা জাকারিয়া
শিক্ষা বিভাগ : নূরানী, নাযিরা ও হিফয বিভাগ।
: শিশু শ্রেণী হতে তাকমীল/দাওরায়ে হাদীস/মাস্টার্স।
: ইফতা বিভাগ।
: নিম্নমাধ্যমিক পর্যন্ত সাধারণ শিক্ষা।
শিক্ষামূলক কার্যক্রম : সাহিত্য ও প্রকাশনা, রচনা ও বক্তৃতা, বিতর্ক প্রতিযোগিতা, তারবিয়্যতী জলসা, কুতুবখানা, পাঠাগার, দাওয়াত ও তাবলীগ ও কম্পিউটার প্রশিক্ষণ ।
জামিয়ার নিবন্ধন :
প্রতিষ্ঠানটি বেফাকুল মাদারিসিল আরাবিয়া বাংলাদেশ (বাংলাদেশ কওমী মাদরাসা শিক্ষা বোর্ড) কর্তৃক নিবন্ধিত। নিবন্ধন নং-১/১৯৫। উল্লেখ্য বেফাকুল মাদারিসিল আরাবিয়া বাংলাদেশ আল-হাইআতুল উলয়া লিল-জামি’আতিল কওমিয়া বাংলাদেশ’’ বোর্ডের অন্তর্ভুক্ত। হাইআত বোর্ডে জামিয়ার কোড নং- ০০১৮৭। আল-হাইআতুল উলয়া লিল-জামি’আতিল কওমিয়া বাংলাদেশ এর মাধ্যমে গণপ্রজান্ত্রী বাংলাদেশ সরকার তাকমীল (দাওরায়ে হাদীস) এর সনদ মাস্টার্স এর সমমান স্বীকৃতি প্রদান করেছে।
জামিয়ার ভূমি :
প্রতিষ্ঠানের দখলে জমির পরিমাণ ১০ একর ৪৩.৭২ শতাংশ। যার মধ্যে ৩৯.৭২ শতাংশ জমি জামিয়া কমপ্লেক্স এবং ৬.৫০ শতাংশ জমি মাসকান্দা মৌজায় পুকুর এবং ৯ একর ৬৫ শতাংশ জমি ময়মনসিংহ সদর উপজেলার চর বড়বিলা মৌজায় রয়েছে।
জামিয়ার অবকাঠামো :
০১. ১২০ x ৩০ ফুট ১টি চারতলা পাকা ভবন।
উক্ত ভবনটি মরহুম আলহাজ ইঞ্জিনিয়ার মীর সারোয়ার রহমান, ২৯৪ মাসকান্দা, সদর, ময়মনসিংহ তাঁর একক অর্থায়নে বিগত ২০০৭ ঈসায়ী সালে নির্মাণ করে দিয়েছেন। আল্লাহ তাঁকে জান্নাতের উঁচু মাকাম দান করুন।
০২. ৬৮ x ২৭ ফুট ১টি হাফ বিল্ডিং টিনসেড ঘর।
০৩. ২৭ x ২২ ফুট ১টি হাফ বিল্ডিং টিনসেড ঘর।
মসজিদ প্রতিষ্ঠা :
১৩৪৭ বাংলা মোতাবেক ১৯৩৯ ঈসায়ী, ১৩৬০ হিজরী সালে মাসকান্দা নিবাসী বিশিষ্ট ব্যক্তিত্ব, দ্বীন দরদী মরহুম ইলিম মন্ডল মসজিদ নির্মাণের জন্য ১৩ শতাংশ জায়গা ওয়াকফ করেন। উক্ত ওয়াকফ ভূমিতে এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গের সহযোগিতায় এলাকার মুসল্লীদের পাঁচ ওয়াক্ত নামায এবং জুমআর নামায জামাতের সাথে আদায়সহ আল্লাহ তাআলার ইবাদত করে তাঁর নৈকট্যলাভ করার উদ্দেশ্যে মসজিদটি নির্মাণ করা হয় এবং নাম রাখা হয় মসজিদুল আমান। অত:পর বিগত ২০১৫ ঈসায়ী, ১৪২২ বাংলা, ১৪৩৬ হিজরী সালে শেখ রাশেদ সালেম আল মাযরুয়ী, আবুধাবী এর মাধ্যমে শেখ মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ আল হামুদী, আবুধাবীর অর্থায়নে ৬৭ x ৬২ ফুট ৫তলা ফাউন্ডেশন দিয়ে ১টি চার তলা পাকা জামে মসজিদ পুন:নির্মিত হয়। আল্লাহ পাক তাঁদের দান কবুল করুন এবং উত্তম বিনিময় দান করুন।
মসজিদের ভূমি :
মসজিদের দখলে জমির পরিমাণ ৩২.৫০ শতাংশ। উক্ত জমির মধ্যে ১৩ শতাংশ মসজিদ কমপ্লেক্স এবং ১৯.৫০ শতাংশ মাসকান্দা মৌজার জমিতে পুকুর।
মসজিদের অবকাঠামো :
০১. ৬৭ x ৬২ ফুট ১টি চারতলা পাকা জামে মসজিদ।
০২. ১৭ x ৩০ ফুট পাকা অযুখানা।
সাবেক নাম : মসজিদুল আমান।
বর্তমান নাম : বিগত ০২-০২-২০০৮ ঈসায়ী সনে গঠনতন্ত্রের মাধ্যমে অত্র জামে মসজিদটির নাম জামিয়া আরাবিয়া আল আমান জামে মসজিদ, মাসকান্দা, মোমেনশাহী, বাংলাদেশ নামে পুন: নামকরণ করা হয়।
জামিয়ার লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য :
সাহাবায়ে কেরাম,তাবেঈন, তাবে তাবেঈন , আয়িম্মায়ে মুজতাহিদীন ও আকাবিরে উলামার ইলম, আমল ও গবেষণাপ্রসূত জ্ঞানের আলোকে ইলমে নববীর পরিপূর্ণ শিক্ষা প্রদানের মাধ্যমে আল্লাহ তাআলার সন্তুষ্টি অর্জন জামিয়ার মূল লক্ষ্য। কুরআনে কারীম ও হাদীস শরীফ তথা ইলমে দ্বীন শিক্ষার পাশাপাশি আখলাকে নববীর বাস্তব অনুশীলনের মাধ্যমে সৎ,যোগ্য আলোকিত একটি মানব কাফেলা গড়ে তোলা, যারা ইলম ও আমলের যথাযথ অনুশীলনে দেশ ও জাতির হিফাজত ও স্বকীয়তা প্রতিষ্ঠায় একটি আদর্শ কর্মী বাহিনীর ভূমিকা পালন করবে।
যুগ সচেতনতা, দক্ষতা ও মানবিক গুণাবলী বিকাশের সাথে সাথে ভ্রান্তির সকল কুয়াশা বিদূরীত করে হক প্রতিষ্ঠায় একজন যোগ্য নায়েবে নবী, নিবেদিতপ্রাণ মুবাল্লিগ,সুবক্ত, যুক্তিবাদী, তার্কিক ,সময়ের ভাষায় কথা বলার মত শক্তিশালী লেখক, একজন মুসলমান যাপিত জীবনে যে সকল সমস্যার সম্মুখীন হয়ে থাকে তার শরয়ী ফায়সালা এবং উদ্ভূত সমকালীন যে কোন সমস্যা বিশ্লেষণ করে তার সমাধান প্রদানে ছাত্রদেরকে পারদর্শী করে গড়ে তোলাই জামিয়ার আসল উদ্দেশ্য ।
জামিয়ার মাসলাক ও মতাদর্শ :
ইমামুল হিন্দ শাহ ওয়ালী উল্লাহ মুহাদ্দিসে দেহলভী ও আকাবিরে দারুল উলূম দেওবন্দ এর চিন্তাধারার আলোকে আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাআতের মাসলাক ও মতাদর্শই হল- জামিয়া আরাবিয়া মিফতাহুল উলূম, মাসকান্দা, মোমেনশাহী,বাংলাদেশ এর মাসলাক ও মতাদর্শ।
আহলুস সুন্নাহ ওয়াল জামাআত, হানাফী মাযহাব এবং হযরত কাসেম নানুতুবী রহ. ও হযরত রশীদ আহমাদ গাঙ্গুহী রহ. এর অনুসৃত মত ও পথই হলো জামিয়ার মত ও পথ। সেমতে জামিয়া আরাবিয়া মিফতাহুল উলূম, মাসকান্দা, মোমেনশাহী, বাংলাদেশ এর সাথে সংশ্লিষ্টগণের বিশ্বাস যে, আকীদা ও বিশ্বাসের ক্ষেত্রে আহলুস সুন্নাহ ওয়াল জামাআত তথা মা- আনা আলাইহি ওয়া আসহাবী এর অনুসরণকারী দলই হলো একমাত্র হক পন্থী দল। এর বাইরে অন্য কোন আকীদা কিংবা চিন্তাধারা গ্রহণযোগ্য নয়। কিতাবুল্লাহ ও রিজালুল্লাহ এর সমন্বিত পথই হলো হিদায়াতের পথ। এর বাইরে অন্য সব মতবাদ ও নীতি ভ্রান্ত।
হিদায়াতের এ পথকে বিস্তারিত ব্যাখ্যা-বিশ্লেষণ ও সন্দেহমুক্তভাবে প্রমাণ করার জন্য আয়িম্মায়ে মুজতাহিদীন ও মুতাকাদ্দিমীন বিভিন্ন মাযহাবের প্রচলন করে গেছেন। জামিয়া আরাবিয়া মিফতাহুল উলূম এর সাথে সংশ্লিষ্টগণ তাঁদের সকলকে হকপন্থী বলে বিশ্বাস করেন। অবশ্য নিজেদের আমলের জন্য হানাফী ফিকহ ও মাতুরিদী কালামকে প্রাধান্য দেন এবং সুলূকের ক্ষেত্রে এ দেশীয় জন সমাজের অধিক কল্যাণার্থে চিশ্তিয়া সিলসিলায় দীক্ষা দানকে প্রাধান্য দেন। ওয়ালীউল্লাহী চিন্তাধারা ও চেতনা কালক্রমে হযরত নূর মোহাম্মদ জানজানবী রহ. ও হাজী ইমদাদুল্লাহ মুহাজিরে মক্কী রহ. এর ফুয়ূয ও বারাকাতে আরো অধিক প্রাণবন্ত হয়েছিল। অবশেষে হযরত কাসেম নানুতুবী রহ. এর মাধ্যমে তা উসূলী ও কালামের আকারে আর হযরত রশীদ আহমাদ গাঙ্গুহী রহ. এর মাধ্যমে তা ফুরুয়ী ও ফিকহের আকারে প্রকাশ পায়। হযরত নানুতুবী রহ. ও হযরত গাঙ্গুহী রহ. কর্তৃক স্থাপিত এ দ্বিমুখী প্রাণবন্ত চেতনাই হলো জামিয়া আরাবিয়া মিফতাহুল উলূম, মাসকান্দা, মোমেনশাহী,বাংলাদেশ -এর পাথেয়। উপরোক্ত সকল উপকরণের সমন্বিত নাম হলো- জামিয়া আরাবিয়া মিফতাহুল উলূম, মাসকান্দা, মোমেনশাহী,বাংলাদেশ। আর এ সমন্বিত নীতিমালাকেই বলা হয় দেওবন্দিয়্যাত।
হযরত হাকীমুল ইসলাম ক্কারী মুহাম্মদ তায়্যেব রহ. বলেন, মাসলাকে দারুল উলূমের মূলনীতি হলো সাতটি যথা :
ক. ইলমে শরীয়ত অর্জন :
আকাবিরের সুহবত ও তাশরীহাতের আলোকে আকীদা, আমল, মুআমালা, মুআশারা ইত্যকার সকল বিষয়ে শরীয়তের এমন জ্ঞান ও প্রজ্ঞা লাভ করা, যা যাহির ও বাতিন, ইলম ও আমল, উপলব্ধি ও অনুভূতি, রুচি ও প্রকৃতি সকল ক্ষেত্রে নির্ভরযোগ্য সূত্র মতে নবী করীম সা. পর্যন্ত সনদ যুক্ত হয়।
খ. তাসাওউফ ও তরীকতের অনুসরণ :
সুফিয়ায়ে কেরামের নির্ভরযোগ্য সিলসিলা ও পদ্ধতি অনুসারে আত্মসংশোধন ও চরিত্র গঠনের মাধ্যমে নূরে বাতেনের পরিপূর্ণতা অর্জন করা।
গ. ইত্তিবায়ে সুন্নত :
জীবনের সকল ক্ষেত্রে সুন্নতে নববীর পূর্ণ অনুসরণ করা এবং নিজের সকল কাজে ও কথায় পরিদৃষ্ট ও অপরিদৃষ্ট সকল ক্ষেত্রে শরীয়তের নীতিমালা অক্ষুন্ন রাখা এবং সকল কাজে নবী আ. এর সুন্নতকে প্রাধান্য দেয়া।
ঘ. হানাফী উসূল ও মূলনীতির প্রাধান্য দান :
আয়িম্মায়ে মুজতাহিদীনের সকলকে হকপন্থী ও নির্ভরযোগ্য জ্ঞান করতঃ নিজের আমল ও ইজতিহাদের ক্ষেত্রে হানাফী মূলনীতির অনুসরণ করা।
ঙ. মাতুরিদী কালামের অবলম্বন :
আকীদা ও কালামের ক্ষেত্রে আহলুস সুন্নাহ ওয়াল জামাআত তথা আশআরী ও মাতুরিদী দর্শনের অনুসরণ করা।
চ. যালালাত ও গুমরাহীর প্রতিরোধ :
উগ্র ও বিকার গ্রস্থ লোকদের সৃষ্ট ফিতনা ফাসাদের বিরুদ্ধে শক্তিশালী প্রতিরোধ গড়ে তোলে শরীয়তের পূর্ণাঙ্গ সংরক্ষণ করা।
ছ. কাসেমী ও রশীদী কর্মপন্থা অবলম্বন :
উপরোক্ত ধারা সমূহ বাস্তবায়ন করার লক্ষ্যে দারুল উলূম দেওবন্দ কেন্দ্রিক হযরত কাসেম নানুতুবী রহ. ও হযরত রশীদ আহমদ গাঙ্গুহী রহ. যে নীতি ও পদ্ধতি অবলম্বন করে গেছেন সে নীতি ও পদ্ধতি অবলম্বন করা।
সেমতে, মাসলাকে জামিয়া আরাবিয়া মিফতাহুল উলূম, মাসকান্দা, মোমেনশাহী,বাংলাদেশ আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাআত ও হানাফী মাযহাবের অনুসারী হবে এবং এর শিক্ষা ব্যবস্থা ও পদ্ধতি ও মূলত : দারুল উলূম দেওবন্দের অনুকরণে হবে।
জামিয়া আরাবিয়া মিফতাহুল উলূম, মাসকান্দা, মোমেনশাহী,বাংলাদেশ এর শিক্ষক, কর্মকর্তা, কর্মচারী ও শিক্ষার্থী সকলেই সর্বাবস্থায় উল্লেখিত মূলনীতিতে আস্থাবান এবং এর অনুসারী হবে।
বিগত ১৪২৮-১৪২৯ হিজরী মোতাবেক ২০০৬-২০০৭ ঈসায়ী শিক্ষাবর্র্ষে আল্লাহ পাকের মেহেরবাণীতে মক্তব আকারে শুরু হওয়া প্রতিষ্ঠানটি হাঁটি হাঁটি পা পা করে অল্প সময়ের ব্যবধানে কওমী মাদরাসা শিক্ষার সর্বোচ্চ স্তর তাকমীল/দাওরায়ে হাদীস/মাস্টার্স এবং বিগত ১৪৩৮-১৪৩৯ হিজরী মোতাবেক ২০১৭-২০১৮ ঈসায়ী শিক্ষাবর্ষে উচ্চতর বিশেষ শিক্ষা ইফতা বিভাগ (ফতোয়া বিভাগ) পর্যন্ত উন্নীত হয়েছে। এতে বিশ্ব বিখ্যাত ইসলামী শিক্ষাকেন্দ্র ভারতের দারুল উলূম দেওবন্দ এর শিক্ষা পদ্ধতি অনুসরণ করে বেফাকুল মাদারিসিল আরাবিয়া বাংলাদেশ (বাংলাদেশ কওমী মাদরাসা শিক্ষা বোর্ড) ও আল-হাইআতুল উলয়া লিল-জামি‘আতিল কওমিয়া বাংলাদেশ কর্তৃক অনুমোদিত পাঠ্যতালিকা অনুযায়ী জামিয়ার শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালিত হবে। এখানে নূরানী, নাযিরা ও হিফয বিভাগসহ শিশু শ্রেণী হতে কওমী মাদরাসা শিক্ষার সর্বোচ্চ স্তর তাকমীল/দাওরায়ে হাদীস (মাস্টার্স) এবং উচ্চতর বিশেষ শিক্ষা ইফতা বিভাগ (ফতোয়া বিভাগ) পর্যন্ত ইসলামী শিক্ষার সাথে সাথে মাধ্যমিকস্তর পর্যন্ত বাংলা, গণিত, ইংরেজী, ভূগোল ও ইতিহাস প্রভৃতি প্রয়োজনীয় সাধারণ শিক্ষা প্রদান করা হয়। যাতে ছাত্ররা মেধা ও মননে সমাজ সচেতনতার পাশাপাশি দেশ ও জাতির রাহনুমায়ির যোগ্যতা অর্জন করতে পারে সে লক্ষ্যেই জামিয়ার শিক্ষা ব্যবস্থাকে সুপরিকল্পিতভাবে সাজানো হয়েছে।
জামিয়ার পাঠ্যসূচীর মূল ভিত্তি :
কুরআন মাজীদ, হাদীস শরীফ , তাফসীর, উসূলে তাফসীর, ফিকহ, উসূলে ফিকহ (ইসলামী আইন শাস্ত্র), উসূলে হাদীস (হাদীসের মূলনীতি শাস্ত্র) ইলমে ক্বিরাত, ইলমে তাজবীদ (বিশুদ্ধ কুরআন পাঠ শাস্ত্র) কালাম, (দর্শন শাস্ত্র) আখলাক (চরিত্র দর্শন) সীরাত (নবী ও সাহাবা চরিত) ইসলামী ইতিহাস, ইসলামী অর্থনীতি ও ফারায়েজ (উত্তরাধিকার বণ্টন শাস্ত্র)।
এসব বিষয়ে মাহারত অর্জন ও বিষয়বস্তু আত্মস্থ করার সুবিধার্থে সহায়ক আরো কিছু বিষয়ে পাঠদান করা হয়। তন্মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো- আদব (আরবী, ফার্সী ও উর্দূ সাহিত্য), বালাগাত (অলংকার শাস্ত্র), নাহব (আরবী ব্যাকরণ), ছরফ (শব্দ প্রকরণ), মান্তেক (যুক্তি ও তর্কশাস্ত্র), ফিরাকে বাতিলা, বাংলা, গণিত, ইংরেজী, ভূগোল ও ইতিহাস প্রভৃতি।
জামিয়ার শিক্ষা বিভাগ :
ক. নূরানী বিভাগ (১বছর) :
এ বিভাগে অভিজ্ঞ ও প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত শিক্ষকগণের মাধ্যমে শিশুদেরকে আরবী বর্ণ পরিচয়, শুদ্ধ উচ্চারণসহ কুরআন শরীফ শিক্ষার সাথে সাথে প্রয়োজনীয় মাসআলা-মাসায়িল, জরুরী ও মাসনূন দুআ-দুরুদ এবং অর্থসহ হাদীস মুখস্থ করানো হয়। যাতে মুসলমান হিসেবে জীবন যাপনের অপরিহার্য বিষয়াবলী শিশু কালেই আয়ত্ব এবং আত্মস্থ হয়ে যায়।
খ. নাযিরা বিভাগ (১বছর) :
অভিজ্ঞ ও প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত শিক্ষকগণের নিবিড় তত্ত্বাবধানে শিক্ষার্থীদেরকে কুরআন শরীফের সহীহ তিলাওয়াত শিক্ষা দেয়া হয়। তাজবীদসহ কুরআন শরীফ শিক্ষার পাশাপাশি জরুরী দুআ-দুরুদ, প্রয়োজনীয় মাসআলা-মাসায়িল ও প্রাথমিক দ্বীনি বিষয়াবলী শিক্ষা দেয়া হয়।
এ বিভাগ থেকে উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীরা হিফযুল কুরআন বা কিতাব বিভাগে ভর্তির সুযোগ লাভ করে।
গ. হিফযুল কুরআন বিভাগ (৩বছর) :
এ বিভাগে দক্ষ ও অভিজ্ঞ হিফয শিক্ষকমন্ডলীর সার্বক্ষণিক তত্ত্বাবধানে কুরআন শরীফ হিফয (মুখস্থ) করানো হয়। কুরআন শরীফের হিফযের পাশাপাশি তাজবীদ, জরুরী মাসআলা-মাসায়িল ও প্রাথমিক দ্বীনি বিষয়াবলী শিক্ষা দেয়া হয়।
উপরোক্ত তিন বিভাগেই প্রয়োজনীয় বাংলা, গণিত ও ইংরেজী শিক্ষা দেয়া হয়।
ঘ. ইবতিদায়ী/প্রাইমারী বিভাগ (৫বছর) :
এ বিভাগে কুরআন শরীফ, তাজবীদ, উর্দূ, ফার্সী, মাসআলা-মাসায়িল এবং প্রাইমারী মানের বাংলা, গণিত, ইংরেজী, ভূগোল ও ইতিহাস প্রভৃতি বিষয়সমূহ শিক্ষা দেয়া হয়।
আরবী বিভাগ :
জামিয়ার অপরাপর শিক্ষা বিভাগসমূহের মধ্যে এটি একটি প্রধান ও বৃহত্তর বিভাগ।
এ বিভাগে চারটি স্তর রয়েছে :
ক. মুতাওয়াসসিতাহ/মাধ্যমিক (৫ বছর) :
এ স্তরে কুরআনে কারীম এর তরজমা, হাদীস শরীফ, নাহু,সরফ, ফিকহ, উসূলে ফিকহ, অলংকার শাস্ত্র, যুক্তি ও তর্কশাস্ত্র, আরবী সাহিত্য, মান্তেক, ইসলামী ইতিহাস, বাংলা, গণিত, ইংরেজী, ভূগোল , ইতিহাস, ক্বিরাত ও তাজবীদ ইত্যাদি পাঠ্য তালিকার অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।
খ. ছানাবিয়্যাহ উলয়া/উচ্চ মাধ্যমিক (৩ বছর) :
এ স্তরে হাদীস, তাফসীর, তরজমায়ে কুরআন, ফিকহ, আরবী সাহিত্য, যুক্তি ও তর্কশাস্ত্র, অলংকার শাস্ত্র ও ফারায়েয ইত্যাদি পাঠ্যসূচীর অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।
গ. ফযীলত/স্নাতক (১ বছর) :
এ স্তরে তাফসীর, উসূলে তাফসীর, হাদীস, উসূলে হাদীস, উচ্চতর ফিকহ, ফিরাকে বাতিলা ইত্যাদি পাঠ্যসূচীর অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।
ঘ. তাকমীল/দাওরায়ে হাদীস/মাস্টার্স (১ বছর) :
এ স্তরে ইলমে হাদীসের উপর ব্যাপক পাঠদান করা হয়। পাঠ্য তালিকার মধ্যে হাদীসের সিহাহ সিত্তাহ নামে পরিচিত প্রসিদ্ধ ৬টি কিতাব যথা : বুখারী শরীফ, মুসলিম শরীফ, তিরমিযী শরীফ, আবু দাউদ শরীফ, নাসাঈ শরীফ ও ইবনে মাজাহ শরীফসহ মুআত্তা মালিক, মুআত্তা মুহাম্মদ ও ত্বহাবী শরীফ মোট ৯টি কিতাব অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।
উপরোক্ত বিভাগসমূহ ছাড়াও উচ্চতর বিশেষ শিক্ষা ইফতা বিভাগ (ফতোয়া বিভাগ) নামে একটি বিভাগ রয়েছে।
ঙ. ইফতা বিভাগ/ফতোয়া বিভাগ (১ বছর) :
এটি একটি উচ্চতর বিশেষ শিক্ষা বিভাগ। এ বিভাগে বিজ্ঞ মুফতিয়ানে কেরামের তত্ত্বাবধানে প্রসিদ্ধ ও নির্ভরযোগ্য ফতোয়ার কিতাব, উসূলে ইফতা, ফিকহ, উসূলে ফিকহ ও ফারায়েজ (উত্তরাধিকারবণ্টন শাস্ত্র) ইত্যাদি শিক্ষা দেয়া হয়। এ ছাড়াও ফতোয়া লিখার অনুশীলন করানো হয়।
ছাত্রদের বহুমুখী প্রতিভা বিকাশের লক্ষে নিম্নোক্ত বিভাগসমূহ রয়েছে :
আল-মিফতাহ পাঠাগার :
ছাত্রদের সুপ্ত প্রতিভা বিকাশের লক্ষ্যে পড়া-লেখার পাশপাশি বক্তৃতা ও সাহিত্য চর্চায় পারদর্শী করে গড়ে তোলার জন্য দেশী-বিদেশী মূল্যবান ইসলামী গ্রন্থসমৃদ্ধ আল-মিফতাহ পাঠাগার নামে একটি পাঠাগার রয়েছে।
সাপ্তাহিক জলসা ও দেয়াল পত্রিকা :
ছাত্রদের বহুমূখী প্রতিভা লালন ও বিকাশের লক্ষ্যে লেখা-পড়ার পাশপাশি নানা ধরনের কার্যক্রম গ্রহণ করা হয়ে থাকে, যা তাদের প্রতিভা বিকাশে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। তন্মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো: বক্তৃতা শিক্ষার জন্য সাপ্তাহিক বক্তৃতা প্রশিক্ষণ জলসা, সাহিত্য চর্চার জন্যে দেয়াল পত্রিকা প্রকাশ, লেখা-লেখিতে পারদর্শী করে গড়ে তোলার জন্যে রচনা প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠান, বক্তা ও তার্কিক হিসেবে গড়ে তোলার জন্যে বক্তৃতা ও বিতর্ক অনুষ্ঠান, জ্ঞানের পরিধি বৃদ্ধির লক্ষ্যে কুইজ প্রতিযোগিতা, ছাত্রদের চরিত্র গঠন ও আমলী উন্নতির জন্য উস্তাদগণের তত্ত্বাবধানে নিয়মিত মাসিক তারবিয়্যাতি জলসাসহ সময়ের চাহিদা বিবেচনায় নানা কার্যক্রম গ্রহণ করা হয়।
কারিগরী প্রশিক্ষণ বিভাগ :
শিক্ষা-দীক্ষার পাশাপাশি ছাত্রদের আত্মকর্মসংস্থানে সক্ষম করে গড়ে তোলার লক্ষ্যে কারিগরী ও শিল্পকর্ম তথা- সেলাই শিক্ষা ও কুটির শিল্পসহ অন্যান্য বিষয়েও প্রশিক্ষণ প্রদান করা পরিকল্পনাধীন রয়েছে।
জামিয়ার প্রশাসনিক বিভাগ
০১. ইহতিমাম (ব্যবস্থাপনা ও পরিচালনা) বিভাগ ।
০২. তা’লীমাত (শিক্ষা) বিভাগ।
০৩. দারুল ইকামা (ছাত্রাবাস) বিভাগ।
০৪. কুতুবখানা (লাইব্রেরী) বিভাগ।
০৫. মাতবাখ (বোর্ডিং) বিভাগ।
০৬. হিসাব (অর্থ) বিভাগ।
০৮. মসজিদ বিভাগ।
০৯. তাসনীফ ও তাকরীর (প্রচার ও প্রকাশনা বিভাগ) বিভাগ ।
১. ইহতিমাম (ব্যবস্থাপনা ও পরিচালনা) বিভাগ :
এ বিভাগ জামিয়ার মূল পরিচালনাকারী এবং আভ্যন্তরীণ সকল বিভাগের কাজ-কর্মের সমন্বয়কারী। সকল বিভাগের সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনার লক্ষ্যে এ বিভাগ নিম্নোক্ত দায়িত্ব পালন করবে :
০১. জামিয়ার যাবতীয় দলিলপত্র, চুক্তিপত্র, হিসাবের খাতা ও কাগজপত্র,নথিপত্র, রসিদ বহি, কুপন, চিঠিপত্র, প্রচারপত্র ও আবেদন পত্র সহ সকল প্রকার কাগজপত্রে জামিয়ার পক্ষে স্বাক্ষর করবে।
০২.জামিয়ার মজলিসসমূহের আহবান করবে, সভার কার্য বিবরণী লিখবে, সিদ্ধান্তাবলী প্রয়োগ ও কার্যকর করবে। ০৩. জামিয়ার প্রশাসনিক, নির্মাণ, মেরামতসহ সকল কাজের দায়িত্ব আঞ্জাম দিবে।
০৪. জামিয়ার সমূদয় দলিলপত্র, হিসাবের খাতাপত্র, যাবতীয় রসিদ বহি, কুপন ও ভাউচারসহ সকল নথিপত্র এবং মালামাল হিফাজত করবে।
০৫. শিক্ষক-কর্মচারীদের দৈনিক কার্য তদারকি করবে , হাজিরা তদারকি করবে এবং ছুটি মঞ্জুর করবে।
০৬. জামিয়া সম্পর্কিত বিল সমূহ ও খরচ সমূহের মঞ্জুরী দান করবে এবং শিক্ষক-কর্মচারীদের বেতন ও ভাতা প্রদান করবে ।
০৭. জামিয়ার সকল প্রকার ছুটি ও খোলার তারিখ ঘোষণা করবে।
০৮. সকল ওয়াকফ সম্পত্তির মুতাওয়াল্লি থাকবে। জামিয়ার স্থাবর অস্থাবর সকল সম্পত্তির হিফাযত করবে।।
০৯. ব্যাপকভাবে দান ও অনুদান সংগ্রহের মাধ্যমে জামিয়ার আয় বৃদ্ধির চেষ্টা করবে।
১০. ছাত্র ভর্তি, কুতুবখানা হতে কিতাব প্রদান, ফ্রি ও আংশিক ফ্রি খানা জারীর অনুমতি প্রদান করবে এবং জামিয়ার পরিবেশ পরিস্কার পরিছন্ন রাখবে।
১১. ছাত্রদের লেখা-পড়া এবং আমলের প্রতি দৃষ্টি রাখবে এবং তাদের মাঝে শৃঙ্খলা বজায় রাখবে। কখনো ছাত্রদের পরস্পরের মাঝে কোন জটিল পরিস্থিতির উদ্ভব হলে তা নিয়ন্ত্রণ করবে। প্রয়োজনে মজলিসে ইলমীর সঙ্গে পরামর্শক্রমে ছাত্র বহিস্কার করবে।
১২. জামিয়ার বার্ষিক ইসলামী সম্মেলন এর ইন্তিজাম করবে, ছাত্র-অভিভাবকদের মিটিং আহবান করবে, কৃতী ছাত্রদের পুরস্কারের ব্যবস্থা করবে।
১৩. আভ্যন্তরীণ সকল বিভাগের হিসাব-নিকাশ নিরীক্ষণ করবে।
১৪. স্টাফ এবং ছাত্রদের সুবিধা ও অসুবিধার প্রতি খেয়াল রাখবে।
১৫. প্রতি মাসে স্টাফ মিটিং করে ছাত্রদের তা’লীম-তারবিয়্যাত ও জামিয়ার সার্বিক উন্নতির জন্য সর্বাত্মক চেষ্টা করবে।
১৬. স্টাফের মাঝে পরস্পরে সুসম্পর্ক এবং সৌহার্দপূর্ণ বজায় পরিবেশ রাখবে।
০২. তা’লীমাত (শিক্ষা) বিভাগ :
শিক্ষকগণকে দক্ষ করে গড়ে তোলার জন্য শিক্ষক প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা এবং ছাত্রদের তা’লীম ও তরবিয়্যতের সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনার লক্ষ্যে এ বিভাগ নিম্নোক্ত দায়িত্ব পালন করবে:
০১.শিক্ষকগণকে দক্ষ, গবেষক এবং বিশেষজ্ঞ হিসেবে গড়ে তোলার জন্য বিষয় ভিত্তিক শিক্ষক প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করবে।
০২.শিক্ষকদেরকে সময়-সময় শিক্ষা সংক্রান্ত বিষয়ে পরামর্শ প্রদান করবে।
০৩. ক্লাস ঠিকমত হচ্ছে কি না এবং উস্তাদগণ ঠিক সময় মত ক্লাশ নিচ্ছেন কি না দৈনিক তা পূর্ণ তদারকি করবে।
০৪. ক্লাসের ত্রুটি হলে প্রয়োজনে শিক্ষকদের সতর্ক করবে এবং এ বিষয়ে ইহতিমামে রিপোর্ট করবে।
০৫. মাকাদিরে আসবাক নির্ধারণ করবে ও এর তদারকি করবে।
০৬. বেফাকুল মাদারিস ও হাইআত প্রদত্ত নেসাব পূর্ণাঙ্গ করা হচ্ছে কি না এ বিষয়ের তদারকি করবে।
০৭.ছাত্রদের লেখাপড়ার মানোন্নয়নের জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করবে এবং ছাত্রদেরকে তাকরার ও মুতালাআয় লাগানোর জন্য উদ্যোগ গ্রহণ করবে।
৮. ছাত্রদের তা’লীম ও তারবিয়্যাতের সুষ্ঠু ব্যবস্থা করবে।
০৯. ছাত্রদের চারিত্রিক মানোন্নয়নের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।
১০. ছাত্রদের মাঝে সুন্নাতের অনুসরণের চেতনা সৃষ্টি ও তাদেরকে আকাবির ও আসলাফের আদর্শানুসারী করে গড়ে তোলার সম্ভাব্য সকল উদ্যোগ গ্রহণ করবে।
১১. পাঠ্যসূচী নির্ধারণ করবে এবং তাকসীমে আসবাক করে তা মজলিসে ইলমীতে পেশ করবে।
১২. পরীক্ষাসমূহের ব্যবস্থা করবে, পরীক্ষার তারিখ ঘোষণা ও ফলাফল প্রকাশ করবে।
১৩. ছাত্রদের ছুটি মঞ্জুর করবে।
১৪. কোন শিক্ষক ছুটিতে থাকলে যথা সম্ভব তার ছবক অন্য কোন শিক্ষক দ্বারা সাময়িক চালিয়ে নেয়ার ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।
১৫. মজলিসে ইলমীর সভা আহবান করবে এবং সভার কার্যবিবরণী লিপিবদ্ধ করবে এবং সিদ্ধান্তাবলী কার্যকর করবে।
১৬. ছাত্র-শিক্ষকদের তা’লীম সম্পর্কিত বক্তব্য শ্রবণ করবে এবং যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।
১৭. ছাত্রদের ভর্তির ব্যবস্থা ও রেজিষ্টার খাতায় তাদের পূর্ণ নাম, ঠিকানা লিপিবদ্ধ করে রাখবে ।
১৮. ছাত্রদের ক্লাশের হাজিরা খাতার ব্যবস্থা করবে, হাজিরা তদারকি করবে এবং অনুপস্থিত ছাত্রদের তাম্বীহ করবে।
১৯. কোন ছাত্রকে পড়াশোনায় অমনযোগী দেখলে বা কোনরূপ বিঘ্ন ঘটলে প্রথমে তাকে সতর্ক করবে। সংশোধন না হলে অভিভাবককে অবহিত করবে।
২০. ছাত্রদের তরবিয়্যত দান ও লেখাপড়ার প্রতি আগ্রহ বৃদ্ধির জন্য পাক্ষিক কিংবা মাসিক তরবিয়্যতী জলসার আয়োজন করবে ।
২১. ফলাফল সংরক্ষণ ও ফারেগীনদের তালিকা পৃথক রেজিস্টারে সংরক্ষণ করবে।
২২. বোর্ড পরীক্ষার ফলাফল আলাদা সংরক্ষণ করবে
২৩. নূরানী, নাযিরা ও হিফয বিভাগসহ বিশেষ-ক হতে হিদায়াতুন্নাহব জামাআত পর্যন্ত রেজাল্ট কার্ড প্রদান করবে।
০৩. দারুল ইকামা (ছাত্রাবাস) বিভাগ :
দারুল ইকামায় অবস্থানরত ছাত্রদের তা’লীম ও তারবিয়্যাতের সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনার লক্ষ্যে এ বিভাগ নিম্নোক্ত দায়িত্ব পালন করবে:
০১. দারুল ইকামায় অবস্থানরত ছাত্রদের নেগরানী করবে।
০২. ছাত্রদের পড়া-লেখা মুখী করার জন্য সর্বাত্মক চেষ্টা করবে।
০৩. ছাত্রদের আমলের প্রতি লক্ষ্য রাখবে।
০৪. ছাত্রদের সুবিধা-অসুবিধার প্রতি লক্ষ্য রাখবে।
০৫. ছাত্রদের সীট বন্টন করবে। সীট বন্টনের ক্ষেত্রে অবশ্যই বয়সের তারতম্যের প্রতি লক্ষ্য রাখবে।
০৬. নিযামুল আওকাত তৈরী করে দারুল ইকামায় অবস্থানরত ছাত্রদেরকে সেমতে পরিচালনা করবে ।
০৭. যদি কোন ছাত্র নিয়ম লঙ্ঘন করে তাকে তাম্বীহ করবে। সংশোধন না হলে তার সম্পর্কে তালীমাত ও অভিভাবককে অবহিত করবে।
০৮. ছাত্রদের পরস্পরের মাঝে কোন ঝগড়া বিবাদ বা কলহের সূচনা হলে তা মীমাংসা করবে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাচ্ছে মনে করলে মুহতামিমকে তৎক্ষণাৎ অবহিত করবে।
০৯. কোন ছাত্র অসুস্থ হয়ে পড়লে দ্রুত তার চিকিৎসার ব্যবস্থা করবে এবং তার অভিভাবককেঅবহিত করবে।
১০. দারুল ইকামায় মাঝে মধ্যে ভিন্ন ভিন্ন সময়ে সমস্ত ছাত্রদের হাজিরা নিবে।
১১. ছাত্রদের আখলাক-চরিত্রের প্রতি নজর রাখবে।
১২. জামিয়ার গৃহাদি, আঙ্গিনা,ক্লাসরুম, বারান্দা,সিড়ি,বাথরুম বিছানাপত্র ও ট্রাঙ্ক ইত্যাদি পরিস্কার পরিচ্ছন্ন রাখার প্রতি খেয়াল রাখবে।
১৩. ছাত্রগণ তাকবীরে উলার সাথে ৫ ওয়াক্ত নামায আদায় করছে কি না তার প্রতি পূর্ণ দৃষ্টি রাখবে।
১৪. ছাত্রদের পোষাক-পরিচ্ছদ ,কাপড়-চোপড় ইত্যাদি পরিচ্ছন্ন রাখার প্রতি খুব খেয়াল রাখবে ।
০৪. কুতুবখানা (লাইব্রেরী) বিভাগ :
জামিয়ার ছাত্র-শিক্ষকদের শিক্ষাগ্রহণ ও শিক্ষাদান, জ্ঞান চর্চা ও গবেষণা কর্ম সুষ্ঠুভাবে পরিচালনার লক্ষ্যে এ বিভাগ নিম্নোক্ত দায়িত্ব পালন করবে :
০১. দরসী কিতাবাদী ও প্রয়োজনীয় ব্যাখ্যা গ্রন্থসমূহ ও শরাহ-শুরুহাত সংগ্রহ করবে।
০২. প্রতি বিষয়ের উচ্চতর নির্ভরযোগ্য রেফারেন্স গ্রন্থ এবং বিভিন্ন ইসলামী লেখকের গ্রন্থসমূহ, বিভিন্ন বাতিল ফিরকার বই-পুস্তকসমূহ সংগ্রহ করবে।
০৩. শিক্ষক-ছাত্রদের জ্ঞান পরিধি বৃদ্ধির জন্য আম্বিয়ায়ে কিরাম ও সাহাবায়ে কিরাম থেকে আরম্ভ করে বর্তমান সময়ের আকাবির ও আসলাফের বিষয়ে রচিত গ্রন্থাবলী, তাদের জীবনী গ্রন্থসমূহ ও অন্যান্য বই-পুস্তক সংগ্রহ করবে।
০৪. যাবতীয় সংগ্রহীত কিতাবাদী ও বই পুস্তক যথারীতি রেজিস্টারভুক্ত করে বিষয় ভিত্তিক বিন্যাসসহ গ্রন্থাগারে সংরক্ষণ করবে।
০৫. বছরের শুরুতে নির্দিষ্ট রেজিস্টারে এন্ট্রি করে শিক্ষক ও ছাত্রদের প্রয়োজনীয় গ্রন্থাবলী সরবরাহ করবে এবং বছর শেষে তা পুনরায় ফেরত গ্রহণ করবে।
০৬. কিতাবাদী, মেরামত ও বাইন্ডিং করানো এবং ছাত্ররা যাতে লাইব্রেরীতে বসে প্রয়োজনীয় কিতাবাদী মুতালাআ করতে পারে তার ব্যবস্থা করবে।
০৭. প্রয়োজনে কোন কিতাব বা বই যাতে ছাত্ররা সাময়িক সময়ের জন্য যেমন- সপ্তাহ, পনের দিন বা এক মাসের জন্য নিজের কাছে রেখে পড়তে পারে তার ব্যবস্থা করবে।
০৫. মাতবাখ (বোর্ডিং) বিভাগ:
আবাসিক ছাত্র শিক্ষকদের খাওয়া-দাওয়ার সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনায় এ বিভাগ নিম্নোক্ত দায়িত্ব পালন করবে :
০১. বোর্ডিং এর দৈনিক কাঁচা বাজার করবে ।
০২. সময়মত খানা রান্না ও বিতরণ করবে।
০৩. দৈনিক ৩ বেলা খাতায় খানার হাজিরা দিবে।
০৪. ফ্রি খানা, আংশিক ফ্রি খানা, খরীদা খানা এবং স্টাফের খানার হিসাব আলাদা আলাদা রেজিস্টারে রাখবে ।
০৫. গোরাবা ফান্ড তথা লিল্লাহ বোর্ডিং থেকে এতিম, গরীব,অসহায় ও মেধাবী ছাত্রদের প্রাপ্ত ফ্রি ও আংশিক ফ্রি খানা দরখাস্তমূলে জারী করবে।
০৮. গোরাব বন্টন খাতায় ফ্রি ও আংশিক ফ্রি খানাদারী ছাত্রদের মাসিক পূর্ণাঙ্গ হিসাব লিপিবদ্ধ রাখবে ।
০৯. খরীদা খানাদারী ছাত্রদের টাকা চলতি মাসের ১০ তারিখের মধ্যে রসিদমূলে আদায় করবে।
১০. বোর্ডিং এর যাবতীয় ব্যয় ভাউচারমূলে করবে। যে সমস্ত মালের ভাউচার দোকান থেকে পাওয়া যায় সেগুলো দোকানের ভাউচার প্রদান করবে।
১১. চাউলের দৈনিক আয়-ব্যয়ের হিসাব আলাদা রেজিস্টারে লিপিবদ্ধ রাখবে ।
১২. দৈনিক কাঁচা বাজারের হিসাব পৃথক রেজিস্টারে লিপিবদ্ধ রাখবে ।
০৬. হিসাব (অর্থ) বিভাগ :
হিসাবের সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনার লক্ষ্যে এ বিভাগ নিম্নোক্ত দায়িত্ব পালন করবে :
০১. দৈনিক, মাসিক এবং বার্ষিক হিসাব তহবিল ভিত্তিক খাতওয়ারী পৃথক পৃথক রেজিস্টারে লিপিবদ্ধ রাখবে।
০২. বিনা রসিদে জামিয়ার নামে কোন টাকা গ্রহণ করবে না।
০৩. যাবতীয় প্রাপ্ত টাকা ক্যাশ বহিতে এন্ট্রি করবে।
০৪. নির্দিষ্ট খাতের টাকা নির্দিষ্ট খাতেই জমা করবে।
০৫. প্রত্যেকটি ফান্ডের রসিদ বহি নম্বরসহ রেজিস্টারে সংরক্ষণ করবে।
০৬. কুপন বহির জন্য আলাদা রেজিস্টার সংরক্ষণ করবে।
০৭. রসিদ বিতরণ এর জন্য আলাদা রেজিস্টার সংরক্ষণ করবে।
০৮. বেতন ও ভাতা প্রদানের জন্য আলাদা রেজিস্টার সংরক্ষণ করবে। স্বাক্ষর গ্রহণ এবং রাজস্ব টিকিট এর মাধ্যমে বেতন ও ভাতা প্রদান করবে ।
০৯. প্রত্যেক খরচের জন্য ভাউচার সংরক্ষণ করবে এবং প্রতিটি ভাউচার ক্রমিক অনুযায়ী মাস ও বছরওয়ারী সুনির্দিষ্ট উপায়ে সংরক্ষণ করবে।
১০. হিসাব রক্ষক প্রতি মাসের আয়-ব্যয়ের হিসাব ফান্ডওয়ারী আলাদা-আলাদা খাতায় লিপিবদ্ধ করে দস্তখত করবে।
১১. বছর শেষে আভ্যন্তরীণ হিসাব নিরীক্ষা উপ পরিষদ এবং চার্টার্ড একাউন্ট্যান্ট দ্বারা সকল হিসাব অডিট করাবে।
১২. জামিয়ার অর্থ বছর ১ জুলাই থেকে শুরু হবে এবং ৩০ জুন শেষ হবে।
০৮. মসজিদ বিভাগ :
নিম্নোক্ত বিষয়গুলো এ বিভাগের দায়িত্বে থাকবে।
০১. এলাকার মুসল্লী, ছাত্র ও শিক্ষকদের ওয়াক্তিয়া নামায, জুমার নামায, রমযান মাসে তারাবীর নামায এবং দুই ঈদের নামায আদায়ের সুষ্ঠু ব্যবস্থা করবে ।
০২. মসজিদে প্রভাতী মক্তব, বয়স্ক শিক্ষা, দাওয়াত ও তাবলীগের কাজ চালু রাখবে।
০৩. মসজিদ পাঠাগার চালু রাখবে।
বি.দ্র. এলাকার মুসল্লী ও ছাত্র-শিক্ষকদের জন্য ইসলামিক ফাউন্ডেশন ময়মনসিংহ শাখার সহযোগিতায় ইসলামী মূল্যবান গ্রন্থসমৃদ্ধ একটি মসজিদ পাঠাগার রয়েছে। উক্ত পাঠাগার হতে ৭ দিন ১৫ দিনের জন্য বই গ্রহণ করে ইসলামী জ্ঞান অর্জনের ব্যবস্থা রয়েছে।
০৪. মুসল্লীদের যাবতীয় সুযোগ-সুবিধার প্রতি খেয়াল রাখবে।
০৫. মসজিদের ভিতর ও বাহির, অযুখানা, ইস্তিঞ্জাখানা, আঙ্গিনা, বাগান ও মসজিদ ক্যাম্পাস সর্বদা পরিস্কার পরিচ্ছন্ন রাখবে।
৯। তাসনীফ ও তাকরীর (প্রচার ও প্রকাশনা ) বিভাগ :
মানুষকে দ্বীনের দাওয়াত দেয়ার অন্যতম একটি মাধ্যম হল লেখালেখি। তাই মুসলিম জনসাধারণকে সময় সময় দ্বীনের জরুরী বিষয় এর জ্ঞান দান এবং সাময়িক উদ্ভূত সমস্যার সমাধান প্রদান এর লক্ষে বার্ষিক স্মারণিকা, সাময়িকী, ডায়েরী, বিভিন্ন পুস্তক-পুস্তিকা ও প্রচারপত্র প্রকাশ করা এ বিভাগের দায়িত্ব থাকবে।
০১. ফতোয়া ও গবেষণা বিভাগ।
০২. দাওয়াত ও তাবলীগ বিভাগ।
০৩. দ্বীনি জলসা বিভাগ।
০১. ফতোয়া ও গবেষণা বিভাগ :
অভিজ্ঞ ও দক্ষ একজন সনদপ্রাপ্ত মুফতীর তত্ত্বাবধানে এ বিভাগ পরিচালিত হবে।
মুসলিম জনসাধারণের দ্বীনি জিজ্ঞাসা ও সমস্যার শরয়ী সমাধান দেয়া, বিভিন্ন ফিতনা-ফাসাদ হতে হিফাযত করা, আকস্মিক কোন বিষয় সম্পর্কে অবহিত করা এবং বিভিন্ন বিষয়ের উপর গবেষণা করা এবিভাগের অন্যতম দায়িত্ব হবে।
০২. দাওয়াত ও তাবলীগ বিভাগ :
আল্লাহর দ্বীনের দিকে অমুসলিমদেরকে দাওয়াত দেয়া এবং মুসলমানদেরকে আমলের দাওয়াত দেয়া প্রতিটি ঈমানদারের ঈমানী দায়িত্ব। যে এলাকায় কোন দ্বীনি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থাকে, সে এলাকার মানুষকে দ্বীনের দিকে আহবান করা সে প্রতিষ্ঠানের অন্যতম দায়িত্ব বটে। তবে ব্যাপক ভিত্তিতে সর্বক্ষণ এ কাজ করতে গেলে তালীমের ক্ষতি হবে নিঃসন্দেহে।
অতএব সপ্তাহে একদিন (বৃহস্পতিবার বিকেলে) ছাত্রদেরকে কোন একজন শিক্ষকের তত্ত্বাবধানে জামিয়ার সংশ্লিষ্ট এলাকার মসজিদসমূহে দাওয়াতের কাজ করার জন্য প্রেরণ করবে। ছাত্ররা মসজিদে গিয়ে তাবলীগ জামাতের আদর্শের অনুকরণে মানুষকে মসজিদে সমবেত করবে এবং তাদেরকে ঈমান, একীন ও আমলের প্রতি উদ্বুদ্ধ করবে। সূরা কেরাত, দোয়া-দরুদ ও মাসআলা-মাসায়িল শিক্ষা দিবে। এজন্য স্থানীয় তাবলীগের মারকাজের সাথে যোগাযোগ রক্ষা করা যেতে পারে এবং তাদের থেকে এ ব্যাপারে সহযোগিতা নেয়া যেতে পারে।
যে মসজিদে দাওয়াতী প্রোগ্রাম নিয়ে যাওয়া হবে, সে মসজিদে ছাত্ররা আমলের হালতে রাত যাপন করবে এবং স্থানীয় জনগণকে তাদের সঙ্গে রাত যাপন করার জন্য আমন্ত্রণ জানাবে এবং জনগণকে দাওয়াতী কাজে বের হওয়ার জন্য উদ্বুদ্ধ করবে। যারা সময় দিতে রাজী হবে, তাদেরকে স্থানীয় মারকাজের সঙ্গে জুড়ে দিবে।
এতে এলাকার মানুষ দ্বীনের হিদায়াত লাভ করতে পারবে। এতদসঙ্গে ছাত্রদের মাঝেও দাওয়াতী কাজের চেতনা সৃষ্টি হবে এবং দাওয়াত ও তাবলীগের কাজের প্রশিক্ষণ হাসিল হবে। এ ছাড়াও পরীক্ষা ছুটি, ঈদের ছুটি, রামাদানের ছুটিতে ৩ দিন, ১০ দিন এবং ৪০ দিনের জন্য বের হওয়ার চেষ্টা করবে।
০৩. দ্বীনি জলসা বিভাগ :
ছাত্র-শিক্ষক ও মুসলিম জনসাধারণ, এলাকাবাসী ও দেশবাসীকে দ্বীনি বিষয়ে উদ্বুদ্ধকরণের লক্ষ্যে দেশের শীর্ষস্থানীয় উলামায়ে কিরামের মাধ্যমে বার্ষিক ইসলামী সম্মেলন, ওয়ায মাহফিল এবং সময় সময় দ্বীনি জলসা করা হবে। যাতে তারা উভয় জাহানে সফলতা অর্জন করতে পারে।
০১. সাধারণ তহবিল।
০২. বোর্ডিং তহবিল।
০৩. গোরাবা তহবিল।
০৪. কুতুবখানা তহবিল।
০৫. মসজিদ তহবিল।
০১. সাধারণ তহবিল :
মুসলমান জনসাধারণের দান, অনুদান, মাসিক দান, বার্ষিক দান, দান বাক্স, দোকান দান বাক্স, কুপন, ওয়াকফ ভূমির আয়, দোয়া, খতম, ফরম, ভর্তি ফি, ছাত্র বেতন, পরীক্ষার ফি, বার্ষিক সম্মেলন ও দোকান ভাড়া ও বাড়ী ভাড়া ইত্যাদি বাবদ প্রাপ্ত অর্থ এ ফান্ডের আয়ের খাত হিসেবে গণ্য হবে।
নিম্নোক্ত খাতে এ ফান্ডের টাকা ব্যয় করা হবে। যথা :
০১. শিক্ষক ও কর্মচারীদের বেতন ও ভাতা।
০২. স্টেশনারী।
০৩. আসবাবপত্র ক্রয়।
০৪. ছাপা ও ফটোকপি
০৫. নির্মাণ, উন্নয়ন ও মেরামত।
০৬. যাতায়াত ও যোগাযোগ।
০৭. তালীমাত ও পাঠাগার।
০৮. বার্ষিক সম্মেলন ।
০৯. মিটিং।
১০. দফতর আপ্যায়ন।
১১. ভূমি ও আনুসঙ্গিক
১২. পানি ও সেনিটেশন
১৩. শিক্ষা বোর্ড ও অডিট
১৪. বিবিধ
০২. বোর্ডিং তহবিল :
বোর্ডিং ফান্ড ছাত্রদের থেকে প্রাপ্ত খরিদা খানার মূল্য, ফ্রি খানা জারীর ফি , খাবারের জন্য দানকৃত দান ও অনুদান ইত্যাদি দ্বারা এ ফান্ড গঠন করা হবে। ছাত্র-শিক্ষকদের খাওয়া-দাওয়া, আসবাবপত্র ক্রয়, গ্যাস বিল ও বেতন-ভাতা ইত্যাদি বাবদ এ ফান্ডের টাকা ব্যয় হবে।
০৩. গোরাবা তহবিল :
যাকাত, ফিতরা, মান্নত, সদকা, কাফফরা, ফিদিয়া ও কুরবানীর চামড়ার টাকা, আনসার কাফেলার চাউল বা টাকা, গোরাবা দান বাক্সের টাকা এবং গরীব ছাত্রদের জন্যে ব্যয়ের শর্তে প্রদত্ত দান ও অনুদানের টাকা দিয়ে এ ফান্ড গড়ে তোলা হবে। এ ফান্ডের টাকা একমাত্র গরীব ছাত্রদের প্রয়োজন যেমন খোরাকী, পোষাক, কিতাব, বই ও খাতা-কলম ইত্যাদি প্রয়োজন পূরণের জন্য ব্যয় করা হবে।
০৪. কুতুবখানা তহবিল :
ছাত্রদের থেকে গৃহীত ফরম ও কিতাবের ফি, জামিয়ার কিতাব ক্রয়ের জন্য প্রদত্ত দান ও অনুদান দ্বারা এ ফান্ড গড়ে তোলা হবে। এ ফান্ডের টাকা কেবল মাত্র কিতাব ক্রয়, বাইন্ডিং, মেরামত, আসবাব পত্র ক্রয় এবং এ বিভাগের দায়িত্বশীলের বেতন-ভাতা ও সংশ্লিষ্ট কাজের জন্য ব্যয় করা হবে।
০৫. মসজিদ তহবিল :
মসজিদের উদ্দেশ্যে প্রদত্ত দান, অনুদান, মাসিক দান, মসজিদের দান বাক্সের টাকা এবং মসজিদের জন্য ওয়াকফ ভূমির আয় দ্বারা এ ফান্ড গঠন করা হবে। মসজিদ নির্মাণ,উন্নয়ন, মেরামত, মসজিদের প্রয়োজনীয় ব্যয়, বিদ্যুৎ বিল , আসবাবপত্র ক্রয়, খতীব, ইমাম, মুআযযিন ও খাদেমের বেতন-ভাতা ইত্যাদি কাজে তা ব্যয় করা হবে।
জামিয়ার বৈশিষ্ট
০১. আল্লাহ তাআলার সন্তুষ্টি অর্জনের মাধ্যমে পরকালের মুক্তি লাভ করা আমাদের মূল লক্ষ্য।
০২. দেশের বিখ্যাত ইসলামী চিন্তাবিদ ও বিষয় ভিত্তিক দক্ষ অভিজ্ঞ সুযোগ্য উলামায়ে কেরাম দ্বারা পাঠদান ।
০৩. শিশু শ্রেণী থেকে তাকমীল/দাওরায়ে হাদীস /মাস্টার্স পর্যন্ত বেফাকুল মাদারিসিল আরাবিয়া বাংলাদেশ ও আল হাইআতুল উলয়া লিল-জামিআতিল কওমিয়া বাংলাদেশ শিক্ষা বোর্ড এর সিলেবাস অনুযায়ী পাঠদান ।
০৪. কোলাহলমুক্ত ও নিরিবিলি পরিবেশে পাঠদান ।
০৫. ইসলামী ইলম ও জ্ঞান চর্চার জন্য সমৃদ্ধ কুতুবখানা ও উম্মুক্ত পাঠাগার ।
০৬.কম্পিউটার ল্যাব।
০৭. সর্বোচ্চ তিন বছরে হিফয সম্পন্ন করার আন্তরিক প্রচেষ্টা ।
০৮. ছাত্রদের প্রতিভা বিকাশের লক্ষ্যে সপ্তাহিক বক্তৃতা প্রশিক্ষণ ।
০৯.তালীমের সাথে সাথে তারবিয়্যাতের প্রতি সমান গুরুত্বসহ রাসুল সা.এর সুন্নাত ও ইসলামী আদর্শের বাস্তব অনুশীলন।
১০. নিরবিচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ ব্যবস্থা (জেনারেটর ও সোলার এর সুবিধা) ।
১১. এতিম, গরীব, অসহায় ও মেধাবী ছাত্রদের জন্য ফ্রি খানার ব্যবস্থা।
১২. মেধাবী শিক্ষার্থীদের জন্য শিক্ষাবৃত্তি ও পুরস্কারের ব্যবস্থা ।
১৩. ছাত্রদের নিরাপত্তার জন্য জামিয়ার মূল গেইটে সার্বক্ষণিক পাহাড়ার ব্যবস্থা ।
১৪. নিজস্ব গঠনতন্ত্র মোতাবেক প্রতিষ্ঠান পরিচালনা ।
১৫. প্রখ্যাত শিক্ষাবিদ ও দেশ বরেণ্য হক্কানী উলামায়ে কেরামের মাধ্যমে সময় সময় ছাত্রদের নসীহত প্রদান।
১৬. আরবী ও বাংলা দেয়ালিকা প্রকাশ।
১৭. নূরানী, নাযিরা ও হিফয বিভাগসহ বিশেষ-ক থেকে হিদায়াতুন্নাহব জামাআত পর্যন্ত রেজাল্ট কার্ড প্রদান।
১৮. অভিভাবকের সাথে আলোচনা-পর্যালোচনার মাধ্যমে ছাত্রদের লেখা-পড়ার মানোন্নয়নে সার্বিক চেষ্টা।
১৯. সময়ের চাহিদা পূরণার্থে ধর্মীয় শিক্ষার পাশাপাশি নিম্নমাধ্যমিক পর্যন্ত সাধারণ শিক্ষা।
২০. ৩ বেলা মানসম্মত খাবার পরিবেশন।
২১. আলেম, শিক্ষিত এবং বিজ্ঞ কমিটি কর্তৃক প্রতিষ্ঠান পরিচালনা ।
২২. বোর্ড পরীক্ষায় ভাল ফলাফল ।
ভর্তি সংক্রান্ত তথ্যাবলী
০১. দফতরে তালীমাত থেকে ভর্তি ফরম সংগ্রহ করতে হবে ।
০২. ভর্তির জন্য মনোনীত ছাত্রের অভিভাবককে ভর্তি ফরমে ছাত্রের সকল তথ্য সঠিকভাবে প্রদান করতে হবে ।
০৩. ভর্তি ফরমে উল্লেখিত সকল নিয়ম-কানূন মেনে চলার বিষয়ে ছাত্র ও অভিভাবক উভয়কে অঙ্গীকারাবদ্ধ
হতে হবে।
০৪. ভর্তি ফরমের সাথে ১ কপি পাসপোর্ট সাইজ ছবি ও এন আই ডি কার্ড বা জন্ম নিবন্ধন সার্টিফিকেটের ফটোকপি জমা দিতে হবে ।
০৫. ভর্তিচ্ছু ছাত্রের বয়স নূন্যতম ৬ বছর হতে হবে ।
০৬. পুরাতন ছাত্রদের বিগত বছরের বার্ষিক বা বোর্ড পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে হবে।
০৭. নতুন ছাত্রদের মৌখিক এবং লিখিত পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে হবে ।
জামিয়ার শিক্ষা বছর
জামিয়ার শিক্ষা বছর শাওয়াল মাস থেকে শুরু হবে এবং রমযান মাসে শেষ হবে।
জামিয়া খোলা, ক্লাস ও পরীক্ষা
♦ শাওয়াল মাসের ৭ হতে ১০ তারিখের মধ্যে জামিয়া খোলা হবে ।
♦ শাওয়াল মাসের ১৫ হতে ২০ তারিখের মধ্যে ক্লাস শুরু হবে।
♦ মাসিক পরীক্ষা : যিলহজ মাসের ১ম সপ্তাহে হবে।
♦ প্রথম সাময়িক পরীক্ষা : সফর মাসের ১ম সপ্তাহে হবে।
♦ দ্বিতীয় সাময়িক পরীক্ষা : জুমাদাল উলা এর ১ম সপ্তাহে হবে।
♦ বেফাক, হাইআত, ইত্তেফাক ও বার্ষিক পরীক্ষা : শা’বান মাসে হবে।
জামিয়ার ছুটি
ক. ঈদুল আযহা উপলক্ষে ছুটি ১০ দিন।
খ. ১ম সাময়িক পরীক্ষার পর ছুটি ৬ দিন।
গ. ২য় সাময়িক পরীক্ষার পর ছুটি ৬ দিন।
ঘ. বেফাক, হাইআত ও বার্ষিক পরীক্ষা পর রমযান ও ঈদুল ফিতর উপলক্ষে কিতাব বিভাগের জন্য বার্ষিক ছুটি ৪৫ দিন।
ঙ. বার্ষিক পরীক্ষার পর নূরানী, নাযিরা ও হিফয বিভাগের জন্য রমযানের পূর্বে ছুটি ১০ দিন।
চ. ঈদুল ফিতর উপলক্ষে নূরানী, নাযিরা ও হিফয বিভাগের জন্য ছুটি ১২ দিন।
ছ. নূরানী, নাযিরা ও হিফয বিভাগের জন্য ঈদুল ফিতর এবং রমযানের ছুটি ২৬ রমযান হতে শুরু হবে।
জ. শুক্রবার সাপ্তাহিক ছুটি থাকবে।
ঝ. সরকারী ছুটির দিবস সমূহে জামিয়া ছুটি থাকবে।
জামিয়ার আশু প্রয়োজন
০১। বিগত ১৪৩৮-১৪৩৯ হিজরী মোতাবেক ২০১৭-২০১৮ ঈসায়ী শিক্ষাবর্ষে ইফতা বিভাগ (ফতোয়া বিভাগ) খোলা হয়েছে। এ ছাড়া ছাত্র সংখ্যা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। জামিয়ার বর্তমান শ্রেণী কক্ষের যে অবকাঠামো রয়েছে তা যথেষ্ট নয়। বিধায় ছাত্রদের লেখা-পড়ায় খুবই বিঘ্ন ঘটছে। এ সমস্যা সমাধানকল্পে দ্রুত শ্রেণি কক্ষের জন্য নতুন ভবন নিমার্ণ অত্যন্ত জরুরী হয়ে পড়েছে।
০২। জামিয়ার ছাত্রদের অধিকাংশই আবাসিক। আবাসিক ছাত্রদের আবাসনের পৃথক ব্যবস্থা না থাকায় শ্রেণি কক্ষকেই ছাত্রাবাস হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে। যে কারণে ছাত্রদের লেখা-পড়ায় বিরূপ প্রভাব পড়ছে। তাই এ সমস্যা সমাধানকল্পে শ্রেণি কক্ষের পাশাপাশি পৃথক ছাত্রাবাস ভবন নিমার্ণ অত্যন্ত জরুরী।
০৩। একটি প্রতিষ্ঠানের চালিকা শক্তি হচ্ছে তার প্রশাসনিক ব্যবস্থা। জামিয়ার প্রশাসনিক কার্যক্রম সুষ্ঠুভাবে সম্পাদনের সুবিধার্থে পৃথক ব্যবস্থাপনা অত্যন্ত জরুরী। এজন্য পরিকল্পিত এবং সুবিন্যস্ত একটি পৃথক প্রশাসনিক ভবন নিমার্ণ একান্ত প্রয়োজন।
০৪। কুরআন, হাদীস ও ধর্মীয় জ্ঞানের সাথে সাথে ছাত্রদেরকে আধুনিক প্রযুক্তি কম্পিউটার ও টেকনোলজি সম্পর্কে দক্ষ ও যোগ্য করে গড়ে তোলার লক্ষ্যে ইতিমধ্যেই পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে। এ লক্ষ্যে ইন্টারনেট সংযোগসহ একটি পূর্ণাঙ্গ কম্পিউটার ল্যাব প্রয়োজন।
০৫। ছাত্রদের বহুমুখী মেধা বিকাশের লক্ষে দেশি-বিদেশী জার্নাল এবং মূল্যবান গ্রন্থসমৃদ্ধ একটি ইসলামী পাঠাগার প্রয়োজন।
০৬। হাদীস, তাফসীর, ফিকহসহ সংশ্লিষ্ট বিষয়ে প্রয়োজনীয় দূর্লভ ও গুরুত্বপূর্ণ গ্রন্থসমৃদ্ধ একটি কুতুবখানা প্রয়োজন।
০৭। জামিয়ার শিক্ষক মন্ডলী ও কর্মচারীগণ যেন একান্ত চিত্তে নিবিষ্ট মনে নিরবিচ্ছিন্নভাবে ইলমী খেদমত এবং আপন আপন দায়িত্ব সুষ্ঠুভাবে আঞ্জাম দিতে পারে সে সুবিধার্থে শিক্ষক ও কর্মচারীদের জন্য ষ্টাফ কোয়ার্টার নির্মাণ আশু প্রয়োজন।
০৮। জামিয়ার ক্যাম্পাসকে সম্প্রাসরণের লক্ষে জামিয়া সংলগ্ন ভূমি ক্রয় অত্যন্ত জরুরী।
০৯। নূরানী, নাযিরা, হিফয বিভাগ ও এতিমখানার জন্য ৭৫ x ৩০ ফুট ১টি ৫ তলা ভবন নির্মাণ একান্ত পয়োজন।
০১. শ্রেণী কক্ষের জন্য ভবন নির্মাণ।
০২. পৃথক ছাত্রাবাস ভবন নির্মাণ।
০৩. ইন্টারনেট সংযোগ ও ফটোকপি মেশিনসহ কম্পিউটার ল্যাব স্থাপন।
০৪. দেশী-বিদেশী জার্নাল এবং মূল্যবান গ্রন্থসমৃদ্ধ ইসলামী পাঠাগার।
০৫. হাদীস, তাফসীর, ফিকহসহ সংশ্লিষ্ট বিষয়ে প্রয়োজনীয় দূর্লভ ও গুরুত্বপূর্ণ গ্রন্থসমৃদ্ধ কুতুবখানা।
০৬. প্রাথমিক চিকিৎসা কেন্দ্র।
০৭. উন্নত সুবিধা সম্বলিত সেমিনার কক্ষ।
০৮. শিক্ষক ও কর্মচারীদের জন্য স্টাফ কোয়ার্টার নির্মাণ।
০৯. কারিগরি ও কম্পিউটার প্রশিক্ষণ কেন্দ্র।
১০. আধুনিক প্রচার ও প্রকাশনা বিভাগ।
১১. উন্নত মেহমানখানা।
১২. শিক্ষক মিলনায়তন।
১৩. পর্যাপ্ত কিতাবাদী সমৃদ্ধ ফতোয়া বিভাগ।
১৪. উচ্চতর ইসলামী শিক্ষা বিভাগ তথা- তাফসীর, তাখাসসুস ফিল হাদীস, আদব, ও উচ্চতর ক্বিরাত বিভাগ
পর্যায়ক্রমে খোলা।
১৫. মেধাবী ও গরীব ছাত্রদের শিক্ষাবৃত্তি প্রদান।
১৬. জামিয়ার আয়ের লক্ষ্যে মার্কেট ও আবাসিক ভবন নির্মাণ।
১৭. জামিয়ার ক্যাম্পাসকে সম্প্রসারণ করা।
১৮. গরীব, এতিম, অসহায় ও মেধাবী ছাত্রদের খাবারসহ সার্বিক সহযোগিতার ব্যবস্থা করা।
১৯. মহিলাদের দ্বীনি শিক্ষার জন্য একটি পূর্ণাঙ্গ মহিলা মাদরাসা প্রতিষ্ঠা করা ।
২০. উন্মুক্ত খেলাধূলার জায়গা।
এ সব পরিকল্পনা বাস্তবায়নের জন্য আল্লাহ পাকের রহমত, আপনাদের দুআ ও সার্বিক সহযোগিতা কামনা করি।